জরায়ুমুখের ক্যানসার প্রতিরোধ করা যায় কি? কোন কোন উপসর্গ দেখলে সতর্ক হতে হবে?

জরায়ুমুখের ক্যানসার প্রতিরোধ করা যায় কি? কোন কোন উপসর্গ দেখলে সতর্ক হতে হবে?

জরায়ুমুখের ক্যানসার প্রতিরোধ করা যায় কি? কোন কোন উপসর্গ দেখলে সতর্ক হতে হবে?
জরায়ুমুখের ক্যানসার প্রতিরোধ করা যায় কি? কোন কোন উপসর্গ দেখলে সতর্ক হতে হবে?

ফারহানা জেরিন: অল্প বয়স থেকে যৌনজীবন শুরু, একাধিক যৌনসঙ্গী, ধূমপায়ী ও ঋতুচক্রের বিষয়ে উদাসীন হলে জরায়ুমুখের ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থেকেই যায়।

মহিলাদের শরীরে যত ধরনের ক্যানসার হানা দেয়, তার মধ্যে অন্যতম হল জরায়ুমুখের ক্যানসার। পরিসংখ্যান বলছে, প্রতি বছর কয়েক লক্ষ মহিলা এই রোগে আক্রান্ত হন। চিকিৎসকেরা বলছেন, প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পড়লে এই রোগ প্রতিহত করা যায়। সচেতনতাই এই রোগকে ঠেকিয়ে রাখার প্রাথমিক উপায়। তবে মহিলারা কী ধরনের অস্বাভাবিকত্ব দেখলে সতর্ক হবেন, তা অনেক সময়েই বুঝে উঠতে পারেন না। সেই কারণেই জরায়ুমুখের ক্যানসার সম্পর্কে সাধারণ কিছু বিষয় জেনে রাখা জরুরি।

কেন হয় এই অসুখ?

জরায়ুর একেবারে নীচের অংশকে বলা হয় সারভিক্স। সুরক্ষাবিহীন যৌন সম্পর্কের ফলে শরীরে বাসা বাঁধে হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি)। এই ভাইরাসটিই মেয়েদের জরায়ুমুখের ক্যানসারের সবচেয়ে বড় কারণ। অল্প বয়স থেকে যৌনজীবন শুরু, একাধিক যৌনসঙ্গী, ধূমপায়ী ও ঋতুচক্রের বিষয়ে উদাসীন হলে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। ক্রনিক অসুখ, এইচআইভি, দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এই অসুখের রিস্ক ফ্যাক্টর। অনেকের শরীরেই এই ভাইরাস থাকে, তবে তা থাকে নিষ্ক্রিয় অবস্থায়। অনেক ক্ষেত্রে তা নিজে থেকেই চলে যায়। আবার অনেক মহিলার ক্ষেত্রে তা শরীরে থেকে যায়। অনুকূল পরিবেশ পেলে উত্তরোত্তর কোষের পরিবর্তন ঘটাতে শুরু করে। ক্রমে তা ক্যানসারের আকার ধারণ করে। এ ক্ষেত্রে এইচপিভি-১৬, এইচপিভি-১৮, এই দু’টি ভাইরাস সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, ২০ বছরের কমবয়সিদের মধ্যে সাধারণত এই রোগ দেখা যায় না। পরিসংখ্যান বলছে, ৩৮ থেকে ৪২ বছর বয়সি মহিলারা এই ক্যানসারে আক্রান্ত হন সবচেয়ে বেশি। তবে ৬০ বছরের পরেও হতে পারে এই রোগ।

কী কী দেখলে সতর্ক হবেন?

অতিরিক্ত সাদা স্রাব, অনিয়ম ঋতুস্রাব, কোমর ও তলপেটে ব্যথা, হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া, প্রস্রাবের সময়ে জ্বালা করা, ব্যথা হওয়া— এই উপসর্গগুলি জরায়ুমুখের ক্যানসারের লক্ষণ।এই উপসর্গগুলি দেখা দিলে একেবারেই সময় নষ্ট না করে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। কারণ, ফেলে রাখলে বাড়তে পারে বিপদ। এমনকি, মৃত্যুর আশঙ্কাও থেকে যায়। তাই অবহেলা করা ঠিক হবে না। বছরে দু’বার প্যাপ স্মিয়ার পরীক্ষা করাতে হবে। পিসিওএস থাকলেও সচেতন হতে হবে। গর্ভনিরোধক ওষুধ খেলেও পরামর্শ নিতে হবে চিকিৎসকের। এই রোগ প্রতিরোধ করার জন্য টিকাও রয়েছে। তবে এক বার রোগে আক্রান্ত হলে টিকা কতটা কাজ করবে, সে বিষয়ে সন্দেহ থেকেই যায়।

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply